মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠের নাট্যকলা বিভাগের নাট্য অনুষ্ঠান

শিল্পই শান্তি। এটাই মূল বক্তব্য। ২০২৪ এর বিশ্ব নাট্য দিবস উপলক্ষে এই বার্তা দিয়ে নিজের কথা রাখেন নরওয়ের জন ফসে। বিশ্ব নাট্য দিবসে নানান জায়েগায়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে। সেই সুত্রে ২৭শে মার্চ বিশ্ব নাট্য দিবসে মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠের নাট্যকলা বিভাগ এবং ললিতকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক সুন্দর নাট্য অনুষ্ঠানের আয়জন করে এবং উপস্থাপনা করে চারটি নাটক।  
মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠ হল ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বারাণসীতে অবস্থিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্বে শুধুমাত্র কাশী বিদ্যাপীঠ নামে পরিচিত ছিল, কিন্তু পরে এটি মহাত্মা গান্ধীজীর নাম যুক্ত করে তাঁকে উৎসর্গ করা হয়। দিন ছিল ১১ জুলাই ১৯৯৫। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক , স্নাতকোত্তর ও গবেষণা পর্যায়ের শিক্ষা পাওয়া যায়। ইন্ডিয়া টুডে-র সমীক্ষা বলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের মধ্যে ১৩তম স্থান অর্জন করেছে। ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ অসহযোগ আন্দোলনের সময় ( বসন্ত পঞ্চমীর পবিত্র দিন উপলক্ষ্যে ) বাবু শিব প্রসাদ গুপ্ত দ্বারা বারাণসীর ভাদাইনি অঞ্চলে কাশী বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠিত হয়ে। গান্ধীজি এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দেশরত্ন শিবপ্রসাদ জি একজন জাতীয়তাবাদী শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি জমি দান করেন এবং দশ লক্ষ টাকা দিয়ে 'শ্রী হর প্রসাদ শিক্ষা তহবিল' প্রতিষ্ঠা করেন। সেই তহবিল দ্বারাই বিদ্যালয়ের খরচ করা হয়।
১৯৮৩ তে ললিত কলা বিভাগ গড়ে ওঠে। প্রথমে শুধু চারুকলা বিষয়ক শিক্ষা ব্যাবস্থা থাকলেও পরবর্তী কালে পরফার্মিং আর্ট যুক্ত হয়ে। পারফর্মিং আর্টস কে যুক্ত করতে যা পর নেই টা করতে এগিয়ে আসেন এক বিদুষী। পথিকৃৎ হন বিদুষী লিপিকা দাসগুপ্ত। বিভাগের অধ্যক্ষ থাকা কালিন সঙ্গীত, নৃত্য, ম্যুজিকলজি সহ নাট্য কলা বিষয় কে বিভাগে আন্তরভুক্ত করেন। ২০০৪ সালে, এক বর্ষীয় নাটকের সার্টিফিকেট কোর্স দিয়ে আরম্ভ। পরবর্তী বছর থেকে শুরু হয়ে স্নাতকের শিক্ষা (লেখক সেই প্রথম ব্যাচের স্নাতক এবং কাশীর প্রথম বাঙালি যে নাট্য বিষয় পরাস্নাতক উপাধি ভূষিত)।
শত বর্ষীয় মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠের নাট্যকলা বিভাগ ২০ বর্ষ পূর্ণ করে বিশ্ব বিদ্যালয়ের মুকুটে এক পালক জুড়তে সখম হয়েছে। বিশ্ব নাট্য দিবস উপলখে নাট্য বিভাগের এক কক্ষে নির্মিত হয়ে অস্থাই মঞ্চ। পরিবেশিত হয় পর পর নাটক। দর্শক আসনে বিভাগের বর্তমান অধ্যক্ষ ড সুনীল বিশ্বকর্মা ( অযোধ্যার রাম মন্দিরে স্থাপিত শ্রীরাম মূর্তির আদল এই শিল্পির তুলির টান কেই অনুস্মরণ করে নির্মিত), নাট্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ড শুভ্রা বর্মা, বেতার শিল্পী অরবিন্দ গুপ্তা সহ অন্যান্য ব্যেক্তিরা ছিলেন। 
প্রথম নাটক ‘সেউড়ি কে রাম’। উপস্থাপনায় অংশ গ্রহণ করে মধু সিং, কুন্দন কুমার এবং অমরজিৎ সিং। করে মধু সিং ছিলেন শবরীর রূপে, কুন্দন কুমার ছিলেন রামের রূপে এবং অমরজিৎ সিং ছিলেন লক্ষ্মণের রূপে, তারপর আয়ুষ সিং "অশ্বথামা" চরিত্রে একক অভিনয় করেন। এরপর এমএ ড্রামা প্রথম বর্ষের ছাত্র বালমুকুন্দ ত্রিপাঠীর লেখা ব্যঙ্গাত্মক নাটক "লিফাফা" মঞ্চস্থ হয়। নাট্য মঞ্চায়নে অংশ গ্রহণ করে বালমুকুন্দ ত্রিপাঠি নিজে, অবিনাশ পান্ডে, ড লিয়াকত আলী, অরবিন্দ গুপ্ত এবং আমান। এরপর নির্বাচনের পরিবেশকে সামনে রেখে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ হয়।

Comments

Popular posts from this blog

আচার্য ভরত প্রস্তাবিত অভিনয়রীতি

কাশীর বাঙালী টোলার দ্বীতিয় পাতালেশ্বর