গানের সঙ্গে জিলিপি সেবনের উৎসব - কাজরি
গানের সঙ্গে জিলিপি সেবনের উৎসব
আজ কাশীর সঙ্গীত ঐতির্য্যের এক বিশেষ দিন থুড়ি রাত। আজ সারা রাত কাশীর প্রায় সব অঞ্চলের অধিবাসী রাত্রি জাগরণ করবেন। সারা রাত কাজরি শুনবেন ও গাইবেন। আর সঙ্গে এক বিশেষ মিষ্ঠানের সেবন এর পরম্পরা। সেই মিষ্টান্ন হল জলেবি বা জিলিপি।
ময়েরা এই জিলিপির ব্যবস্থায় দু এক দিন আগে থেকেই ব্যস্ত। আজ সারা রাত জিলিপি কেনা বেচা হবে। জিলিপির সাইজ আড়াই প্যাঁচ থেকে হাজার প্যাঁচ এর ওপর নির্ভর করছে।
কাজরি পূর্ব উত্তর প্রদেশের একটি বিখ্যাত লোক সঙ্গীত ও উপ শাস্ত্রীয় সংগীত। কাজরি উৎপত্তিস্থল মির্জাপুর বলে ধারণা করা হয়। মির্জাপুর হল পূর্ব উত্তর প্রদেশে গঙ্গার তীরে অবস্থিত একটি জেলা।
কাজরি বর্ষার মঙ্গলের লোকগান। সাওয়ান মাসে গাওয়া হয় থেকে। ধ্রুপদী গানের স্পর্শে বিকশিত এবং বেনারস ঘরানার গানে বিশেষ প্রভাব দেখা যায়।
বর্ষাকালের বর্ণনা বেশির ভাগই পাওয়া যায় কাজরি গানে, আর বিরহের বর্ণনা এবং রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের বর্ণনা দেখা মেলে। কাজরির প্রকৃতি ক্ষুদ্র এবং শৃঙ্গার রস প্রাধান। উত্তরপ্রদেশ এবং বেনারসে কাজরি গান বহুল প্রচারিত।
প্রাচীনকাল থেকেই, উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর জেলা মা বিন্ধ্যবাসিনীর শক্তিপীঠ হিসেবে বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাই অধিকাংশ প্রাচীন কাজরি শক্তিস্বরূপা দেবীর প্রশংসা বিদ্যমান। বর্তমানে কাজরীর বিষয়বস্তু খুব বিস্তৃত, কিন্তু কাজরি গাওয়া শুরু হয় দেবীগীত দিয়েই।
জনশ্রুতি, কান্তিত রাজার কন্যার নাম ছিল কাজরি। নিজের স্বামীকে খুব ভালোবাসতেন, তাঁর বিরহে কাজরি গান গাইতেন। মির্জাপুরের মানুষ সেই রাজকুমারী কে স্মরণ করে এক বিশেষ দিনে মহোৎসব করে।
হিন্দু শাস্ত্রে শ্রাবণ মাসের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাই এই উৎসব রাখি পূর্ণিমার পরের দিন অথবা ভাদ্র মাসের প্রথম রাতেই নির্ধারিত।
কাজরি গানের চারটি আখড়া হল - পি. শিবদাস মালিভির আখড়া, জাহাঙ্গীর আখড়া, বৈরাগী আখড়া এবং আক্কাদ আখড়া। প্রধানত বেনারস, বালিয়া, চান্দৌলি, গাজিপুর এবং জৌনপুর জেলায় এই বিশেষ উপ শাস্ত্রীয় গান গাওয়া হয়। আজ সেই ভাদ্র মাসের প্রথম সন্ধ্যে।
জয়দেব দাস, কাশী
Comments
Post a Comment